বিশেষ সংবাদদাতা । ইতিহাস আশা জাগাচ্ছিল। ১৯৪ কেন, তার চেয়ে ২০ রান বেশি টপকে জেতার রেকর্ডও আছে বাংলাদেশের। সেটাও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে না। শ্রীলঙ্কার মতো দলের বিপক্ষে, তাদেরই মাটিতে।

২০১৮ সালের ১০ মার্চ প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে নিদাহাস ট্রফির ম্যাচে স্বাগতিক লঙ্কানরা করেছিল ৬ উইকেটে ২১৪ রান। ম্যাচের ২ বল হাতে রেখে ৫ উইকেটের স্মরণীয় জয় পায় বাংলাদেশ।

ওই জয়ের তিন রূপকার ছিলেন মুশফিকুর রহীম (২০৫.৭১ স্ট্রাইকরেটে ৩৫ বলে ৭২ রান), তামিম ইকবাল (২৯ বলে ৪৭) এবং লিটন দাস (১৯ বলে ৪৩)। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদও (১১ বলে ২০ রানের) শেষ দিকে হাত খুলে খেলে দলকে দারুণ জয় উপহার দিয়েছিলেন।

অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ ছাড়া রেকর্ড জয়ের বাকি তিন নায়কের একজনও ছিলেন না এ ম্যাচে। কাজেই কাজটা সহজ ছিল না মোটেই। প্রথমত, এর আগে এর চেয়ে বেশি রান করে জেতার রেকর্ড মাত্র একবারই। দ্বিতীয়ত, সেই জয়ের তিন প্রধান স্থপতির একজনও নেই।
দেখার বিষয় ছিল, তাদের অনুপস্থিতিতে এত বড় রান কী করে তাড়া করে টাইগাররা। খেলা না দেখা কেউ হয়তো ভাবতে পারেন, কোনো একজন হয়তো ঝড়ো ব্যাটিং করে দলকে জিতিয়েছেন। না, সে অর্থে তেমন কেউ নেই। এক কথায় কাউকে এককভাবে এ ম্যাচের জয়ের নায়ক বলা যায় না।
বরং পুরো টিম বাংলাদেশের প্রচেষ্টায় ধরা দিয়েছে এ জয়। এ সাফল্যের মিশনে অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ সামনে থেকে নেতৃত্ব দেয়ার চেষ্টা করেছেন। ঝড়ো কিংবা উত্তাল ব্যাটিং করতে না পারলেও দলকে কক্ষপথে ধরে রেখে জয়ের খুব কাছাকাছি পৌঁছে দেয়ার কাজটি করেছেন রিয়াদ (২৮ বলে ৩৪)।
মুজারাবানির বলে অফস্ট্যাম্পের ঠিক বাইরে পরাস্ত হয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে টাইগার ক্যাপ্টেন যখন আউট হন, দল তখন জয় থেকে ৭ রান দূরে। বাকি দায়িত্বটুকু ঠাণ্ডা মাথায় পালন করেছেন তরুণ শামীম পাটোয়ারী।
আগের ম্যাচে ১৬ বলে ২৯ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেও দল জেতাতে না পারা এ বাঁহাতি আজ ১৫ বলে ৩১ রানের সাহসী ও তেজোদ্দীপ্ত ইনিংস উপহার দিয়েছেন। তাতেই দিলে ৪ বল আগেই জিম্বাবুয়ের রান টপকে যায় বাংলাদেশ।
ওপেনার সৌম্য সরকারও দলকে জয়ের পথে অনেকদূর এগিয়ে দিয়েছেন। তার ব্যাট থেকে আসা ৪৯ বলে ৬৮ রানের ইনিংসটির ওপর ভর করেই জয়ের দিকে এগিয়েছে টাইগাররা।
সঙ্গে সাকিবের ১৩ বলে ২৫ রানের ইনিংসটিও কাজে দিয়েছে ভীষণ। সব মিলে ব্যাটসম্যানদের কার্যকর পারফরম্যান্সে জিম্বাবুয়ের ১৯৩ রানের বড়সড় স্কোরও টপকে গেল বাংলাদেশ।
এই দলটির বিপক্ষেই টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানতাড়ার রেকর্ড ছিল এতদিন। ২০১৬ সালের ১৫ জানুয়ারি খুলনার শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে ১৬৪ রানের লক্ষ্য তাড়া করেছিল টাইগাররা।
সাড়ে ৫ বছর পর সেই জিম্বাবুয়ের দেয়া ১৯৪ রানের কঠিন চ্যালেঞ্জও অতিক্রম করলো বাংলাদেশ। এবার ১৯৪ রান চলে এলো দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান তাড়ার রেকর্ডে।